সুজলা-সুফলা বাংলাদেশে বিশুদ্ধ পানির সমস্যাটা কিন্তু বেশ প্রাচীন এবং বড়ো। বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আমাদের বেশ লম্বা সময় ধরে ভুগতে হয়েছে। এখনও হচ্ছে, যদিও অনেকটাই কম তুলনামূলক। তবে শুধু আমাদের নয়, মধ্যপ্রাচ্য, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এসব পানিবাহিত রোগ ও মহামারিতে প্রতি বছর অনেক প্রাণ ঝরে। যেমন: এখনও বিশ্বব্যাপী শুধুমাত্র ডায়রিয়াতেই প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করেন প্রায় ৮,২৯,০০০ জন। কলেরায় প্রায় ৯৫,০০০ এবং বাংলাদেশে এই সংখ্যাটা ৪,৫০০-এর মতো। (অনুধাবন করার চেষ্টা করুন, সংখ্যাগুলো অনেক বিশাল) দুঃখের বিষয় হলো, এদের অধিকাংশেরই বয়স পাঁচের নিচে।
ভ্যাক্সিনেশন, স্যানিটেশন ইত্যাদি নানা প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশে এগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি আমরা। কিন্তু বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে না পারলে সব চেষ্টাই বৃথা। এখানেই একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নলকূপ। বিশুদ্ধ ও দূষণমুক্ত, পানযোগ্য, ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্যই তো এর ব্যবহার, নয় কি?
নলকূপ দেখেনি, এর পানি পান করেনি, এমন বাংলাদেশি খুঁজে পাওয়া কঠিন বটে! কিন্তু এর মেকানিজমটা কেমন? কীভাবে কাজ করে এটা?
নলকূপের এই শীতে উষ্ণ, গ্রীষ্মে শীতল; বিশুদ্ধ ও তৃপ্তিদায়ক পানি উত্তোলনের পেছনে একটা সরল, আবার কিছুটা জটিল প্রক্রিয়া কাজ করে। গভীর নলকূপের পানির ফিলট্রেশন, ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে নলকূপের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ইত্যাদিতে অনেক খাটা-খাটনি আছে। আবার নলকূপের গোঁড়া থেকে এর মুখ পর্যন্ত পানিটাকে পৌঁছাতেও অসাধারণ কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ করে। এখানে শুধু ওইটুকুনই বোঝার চেষ্টা করবো আমরা। ধৈর্য নিচে চলুন তাহলে জেনে আসি নলকূপ বা টিউবওয়েল কীভাবে কাজ করে?
একটি নলকূপ কীভাবে কাজ করে, তা জানার জন্য আগে এর যন্ত্রাংশগুলো চিনে নিই চলুন। বাহ্যিক কোন যন্ত্রাংশগুলো আমরা দেখতে পাই?—
১. সিলিন্ডার আকৃতির বেশ মজবুত একটি ধাতব বডি।
২. একটি হাতল।
৩. হাতলের সাথে সংযুক্ত একটি রড যেটা নলকূপের ভিতরে চলে যাচ্ছে। এটাকে বলে পিস্টন রড।
৪. পানি বের হওয়ার একটি মুখ।
এখানে একটা জিনিস খেয়াল করুন। আমরা যখন হাতলটি নিচে নামাই, তখন কিন্তু পিস্টন রডটি ওপরে ওঠে। ঠিক বিপরীতটি ঘটে হাতলটি ওপরে ওঠালে, তখন রডটি নিচে নামে। অর্থাৎ, এরা সম্মিলিতভাবে একটা লিভার (lever) তৈরি করছে। এই লিভারটির মাধ্যমেই আমরা যান্ত্রিক শক্তি প্রয়োগ করতে পারছি (এবং পানি উত্তোলন করছি)।
আসল মাথা-নষ্ট ব্যাপারগুলো শুরু হবে এখন থেকে। চলুন আগে দেখে আসি, কলকারখানার ভেতরটিতে কী কী কলকব্জা আছে —
১. একটা পিস্টন। (এজন্যই রডটির নাম হয়েছিল পিস্টন রড। পিস্টন না চিনলে ভয় নেই; শীঘ্রই চিনবো আমরা)
২. পিস্টনের সাথে সংযুক্ত একটি ভাল্ব (Valve) বা কপাটিকা। এটাকে পিস্টন ভাল্ব বলে। আবার মুভিং ভাল্বও বলা হয় মাঝে মাঝে। কারণ, পিস্টনের সাথে এটা ওপরে-নিচে ওঠা-নামা করে।
৩. বডির একদম নিচে সংযুক্ত আরেকটি ভাল্ব। একে বলা হয় ফুট (foot) ভাল্ব। আগেরটাকে মুভিং ভাল্ব হলে, এটাকে বদ্ধ ভাল্বও বলতে পারেন। কারণ এটা ফুট বা নলকূপের গোড়ার সাথে স্থায়ীভাবে আবদ্ধ থাকে।
এখন সময় হয়েছে ‘ভাল্ব’ ও ‘পিস্টন’-এর সাথে পরিচিত হওয়ার—
ভাল্ব (Valve):
ভাল্ব কী আসলে? শুদ্ধ বাংলায় একে আমরা বলি, কপাট বা কপাটিকা। আচ্ছা, কপাট তো আমরা সকলেই চিনি, ঠিক না? কপাটের একটা সহজ উদাহরণ হলো দরজা। এখন বলবেন না, দরজা দেখেননি!
দরজাগুলো কেমন হয়? একটা অংশ দেওয়ালের সাথে শক্ত করে লাগানো থাকে। অপর অংশটি বন্ধ করে বা খুলে আমরা আসা-যাওয়া করি। আবার, এই বন্ধ হওয়া ও খোলা কিন্তু মোটামুটি দুই ধরনের। শুধু একদিকে ধাক্কা দিলেই খুলে যায়; অন্য দিকে বল প্রয়োগ করলে লেগে যায়। আমাদের দেখা অধিকাংশ দরজাই এরকম। কিন্তু এছাড়াও আরেক ধরনের দরজা আছে, যেগুলো দুদিক থেকে ধাক্কা দিয়েই খোলা যায় (বিভিন্ন অফিস ও মলের কাচের দরজা); মোটামুটি কেন্দ্রে থাকলে আমরা একে ‘বন্ধ’ বলি। এই সবকিছুই ভাল্বের উদাহরণ। নলকূপে যে ভাল্বগুলো থাকে, সেগুলো প্রথম টাইপের ভাল্ব। শুধুমাত্র উল্লম্ব বরাবর ওপর দিকে বল প্রয়োগ করলেই ভাল্বগুলো খোলে, অন্যথায় বন্ধ থাকে।
পিস্টন (Piston):
পিস্টন আমরা সকলেই দেখেছি; নানা আকৃতির, নানা আকারের, নানা কাজের; কিন্তু কেউ কেউ হয়তো চিনতে পারছি না। যান্ত্রিক শক্তি দিয়ে কাজ করা হলেই সেখানে পিস্টন জিনিসটাকে দেখা যেতে পারে। সবচেয়ে সরল পিস্টনের উদাহরণ কিন্তু নলকূপের পিস্টনটাই! সোজা কথায়, পিস্টন হলো বল প্রয়োগ করার যন্ত্র। বিশেষত, কোনো সিলিন্ডার আকৃতির ঘনবস্তুর গোলীয় তলটির সাথে সংযুক্ত থেকে পিস্টন ওপরে-নিচে ওঠা-নামা ও চাপ প্রয়োগ করতে পারে।
এবার, এই সবকিছু জোড়া লাগানোর পালা। জোড়া লাগালে যে ‘বায়ুরোধী (airtight)’ বস্তুটি পাই সেটাই মোটামুটি টিউবওয়েল বা নলকূপ।
নলকূপের কার্যপদ্ধতি
আমরা ধরে নিচ্ছি, পানি নলকূপের ফুট ভাল্ব (foot valve)-এর নিচ পর্যন্ত এসে গেছে! ধরে নিই, ফুট বাল্ব থেকে পিস্টন ভাল্ব (piston valve) পর্যন্ত জায়গাটুকুন বায়ুভর্তি। অর্থাৎ, গভীর নলকূপের নিচের অংশটা যথাযথভাবে তার কাজ সম্পন্ন করেছে।
পিস্টনটি একেবারে ওপরে থাকা অবস্থাটা যদি নলকূপের প্রাথমিক অবস্থা ধরে নিই, তাহলে কী হচ্ছে? আমরা যখন হাতলটি ওপরে ওঠাচ্ছি, তখন পিস্টনটি ভাল্বসহ নিচে নামতে চেষ্টা করছে। এখানে একটা মজার ঘটনা ঘটে। যেহেতু মাঝের জায়গাটুকু আবদ্ধ বা ‘এয়ার টাইট’, তাই বাইরের বায়ুর সাথে ভেতরের বায়ুর কোনো সংযোগ নেই। ভেতরের আবদ্ধ বায়ুটায় পিস্টনের মাধ্যমে আমরা যদি যান্ত্রিক শক্তি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করি, তাহলে চাপটা প্যাসকেলের সূত্র (প্যাসকেলের সূত্র: একটা আবদ্ধ পাত্রে তরল বা বায়বীয় পদার্থে বাইরে থেকে চাপ দেওয়া হলে, সেই চাপ সমানভাবে সঞ্চালিত হয়ে পাত্রের সংলগ্ন গায়ে সব দিকে সমানভাবে লম্বভাবে কাজ করে।) অনুযায়ী পুরো আবদ্ধ জায়গার পৃষ্ঠতলের সবখানে সমানভাবে সঞ্চালিত হয়ে লম্বভাবে কাজ করতে চেষ্টা করবে। অর্থাৎ, ধাতর বডিটার ওপর-নিচের ফুট ভাল্বটার ওপর, আবার ওপরের পিস্টন ভাল্বটার ওপরেও সমানভাবে চাপ পড়বে। এখন বায়ু কর্তৃক সর্বত্র প্রয়োগকৃত এই চাপের ফলাফল কী? আগেই বলেছিলাম, ধাতব বডিটা বেশ মজবুত। তাই এই চাপ (তুলনামূলক কম চাপ বলে) মেটাল বডির কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। নিচের ফুট ভাল্বটায় উল্লম্বভাবে ওপর থেকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা জানি, নলকূপের একটি ভাল্বও উল্লম্বভাবে ওপর থেকে চাপ প্রয়োগ করলে খুলবে না; নিচ থেকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। তাই ফুট ভাল্বটার অবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে না। বাকি থাকল শুধু পিস্টন বাল্বটা। খেয়াল করুন, পিস্টন বাল্বটার ওপর কিন্তু আবদ্ধ বায়ুটা, উল্লম্বভাবে নিচ থেকে চাপ প্রয়োগ করছে! বলুন তো এবার কী হবে? পিস্টন বাল্বটা খুলে যাবে!
এতক্ষণের সব বর্ণনা ছিল ঠিক যান্ত্রিক শক্তি প্রয়োগ করার মুহূর্তটার বর্ণনা। এখন আমরা পাচ্ছি, একটা নিচের দিকে গতিশীল পিস্টন, মুখ হা করে থাকা পিস্টনের সাথে সংযুক্ত একটি ভাল্ব এবং একদম গোড়ায়, বদ্ধ আরেকটি ভাল্ব।
যখন আপনি নলকূপের হাতলটিকে একেবারে ওপরে ওঠাবেন, অর্থাৎ পিস্টনটিকে একেবারে নিচে নামিয়ে আনবেন, তখন পিস্টন ও ফুট ভাল্বের মধ্যকার বায়ুর অনেকটাই খোলা ভাল্বের মুখ দিয়ে বাইরে উন্মুক্ত হবে। এবার পিস্টনটিকে ওপরে ওঠানোর পালা।
একটা জিনিস ভুলে গেলে চলবে না, পিস্টনের ওপরে একটা আস্ত বায়ুমণ্ডল রয়েছে। আর এই বায়ুমণ্ডলটা পিস্টনের ওপরে ক্রমাগত একটা চাপ প্রয়োগ করেই যাচ্ছে। কিন্তু এই চাপটা পিস্টন ভাল্বটার অবস্থার কোনো পরিবর্তন করতে পারবে কি? একদমই না। উল্লম্ব বরাবর নিচের দিকে চাপ প্রয়োগ করলে তো আমাদের ভাল্বগুলোর কিছু হয় না! এখন পিস্টনটি যখন ওপরের দিকে ওঠা শুরু করছে, তখন ভাল্বদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে একটা ‘আপেক্ষিক’ শূন্যস্থান তৈরি হচ্ছে। এর ফলে এখানে অবস্থিত গ্যাসের আয়তন বেড়ে যাচ্ছে (ঘনত্ব কমে যাচ্ছে) এবং গ্যাস কর্তৃক ফুট ভাল্বের ওপর প্রয়োগকৃত চাপের মানটাও স্বভাবতই হ্রাস পাচ্ছে। এখানে কিন্তু সবার অগোচরে আরেকটা ঘটনা ঘটছে। ফুট ভাল্বের নিচে থাকা তরল (পানি) ও ওপরে থাকা গ্যাস উভয়ই ভাল্বের ওপর ক্রমাগত একটা সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে যাচ্ছে। ফলে ভাল্বটির অবস্থান নিউট্রাল থাকে। কিন্তু যখন গ্যাস কর্তৃক প্রয়োগকৃত বলের মান হ্রাস পাচ্ছে, তখন দুটো বলের লব্ধি ভাল্বটির ওপর উল্লম্বভাবে ওপরের দিকে একটি বল প্রয়োগ করছে। আর নলকূপের কোনো ভাল্বের ওপর ভার্টিক্যালি ওপরের দিকে বল প্রয়োগ করলে কী হয়? ভাল্বটির মুখ খুলে যায়! এক্সাক্টলি! ভাল্বের এই খোলা মুখ দিয়ে পানি নলকূপের ভেতরে চলে আসে এবং আগে তৈরি হওয়া ‘আপেক্ষিক’ শূন্যস্থানটি পূরণ করে দেয়।
এভাবে পূর্ণ কয়েকটি পাম্প করলেই নলকূপের ভেতরের বায়ুপূর্ণ অবস্থাটা সম্পূর্ণ পানিপূর্ণ হয়ে যায়। আর নলকূপগুলো সবসময় এই পানিপূর্ণ অবস্থায়ই থাকে। এবার তাহলে পানিটা বাইরে বের করার পালা!
আপনি যদি ওপরের কথাগুলো বুঝে থাকেন, তাহলে এটা বোঝাও আপনার জন্য সহজ হবে। কেননা, কার্যত ওপরের প্রক্রিয়ার সাথে নলকূপের বডির ভেতর থেকে পানি বের করার পদ্ধতির কোনো পার্থক্য নেই। জাস্ট, আগের বায়ুকে পানি দ্বারা পরিবর্তিত করে চিন্তা করুন। (উপরের অ্যানিমেশনটি দেখুন) ব্যস! পেয়ে যাচ্ছেন ভূ-গর্ভস্থ বিশুদ্ধ খাবার পানি।
আরেকটা ব্যাপার, অনেকসময় নলকূপে পানি না আসলে একটু পানি দিয়ে নলকূপের হাতল ধরে চাপলে পানি ওঠা শুরু করে, কিন্তু কেন?
মূলত পিস্টন ভাল্বের সমস্যার কারণে এমন হয়। তখন নলকূপ সম্পূর্ণ বায়ুরোধী থাকে না। কিছুটা পানি দিলে, সেই পানি আসলে দুই ভালভের মধ্যবর্তী সকল বায়ু প্রতিস্থাপন করে এয়া টাইটের পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করে। নলকূপের মধ্যে বায়ুরোধী পরিবেশের কাজ হলো পানিটুকুন নলকূপের গোড়া থেকে পিস্টন ভালভ পর্যন্ত নিয়ে আসা। আর একবার এসে পড়লে সেটা ধরে রাখা। কিন্তু নলকূপ যখন এয়ার টাইট থাকে না তখন প্রতিবার সেটা ব্যবহার করার জন্য পানি ঢালতে হয়। এতে সহজ হয়।
পুরো প্রক্রিয়াটি মনশ্চক্ষুতে অনুধারণ করতে নিচের ভিডিয়োটি দেখতে পারেন।
একটা মজার তথ্য দিয়ে লেখাটা শেষ করি। কথায় কথায় “শীতে উষ্ণ, গ্রীষ্মে শীতল” পানির কথা বলেছিলাম। নলকূপে এমন হয় কেন? কী ভুতুড়ে ব্যাপার রে বাবা! এটা কি কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং জাদুর কারণে হয়? না কি প্রকৃতির কোনো খেয়ালিপনা? আসলে তেমন কিছুই নয়। শীত আর গ্রীষ্মে মূলত বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার তারতম্য ঘটে। ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা সারা বছরই মোটামুটি কন্সট্যান্ট থাকে। ফলে গভীর নলকূপ থেকে উত্তোলিত এই পানির তাপমাত্রা সারাবছর মোটামুটি ১৮-২০°C-এর মতো থাকে। ফলে শীতকালে (পরিবেশের তাপমাত্রা তখন ১২-১৫°C) এই জলটাই গরম অনুভূত হয়। অন্য দিকে, গ্রীষ্মে মনে হয় ঠান্ডা!
রেফারেন্স এবং টীকা:
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর ডায়রিয়া ও বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত ও মৃতের সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান।
- Md Taufiqul Islam, John D Clemens, Firdausi Qadri, Cholera Control and Prevention in Bangladesh: An Evaluation of the Situation and Solutions, The Journal of Infectious Diseases, Volume 218, Issue suppl_3, 15 November 2018, Pages S171–S172, https://doi.org/10.1093/infdis/jiy470
উত্তর দিন